পূর্ব বর্ধমান Purba Bardhaman লক্ষ্মীপুজোয় ঘুরে গেল ভাগ্যের চাকা। বরাত জোরে হঠাৎই কোটিপতি হলেন Ausgram আউশগ্রামের বামাচরণ। সার কিনতে স্ত্রীর থেকে টাকা নিয়েছিলেন। তারই ১০০ টাকা ভেঙে দুটি লটারির টিকিট কিনেছিলেন। কোটিপতি হবেন এমনটা স্বপ্নেও ভাবেননি। খবর আসার পর এখন টিকিট সমেত আশ্রয় নিয়েছেন পুলিশ ফাঁড়িতে। আউশগ্রামের Ausgram ডাঙ্গাপাড়ার বাসিন্দা বামাচরণ মেটে। ফসলে দেওয়ার জন্য সার কিনতে ১০০ টাকা দিয়েছিলেন স্ত্রী। কিনতে গিয়ে দেখেন দোকান বন্ধ। সারের দোকান বন্ধ থাকায় সেই টাকা থেকে ৬০ টাকা দিয়ে দুটি টিকিট কাটেন বামাচরণ।
তারপর দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পর টিকিট মেলাতে গিয়ে চোখ কপালে ওঠে। বিশ্বাসই হচ্ছিল যে কোটি টাকার পুরস্কার জিতেছেন। বললেন, “দুই সিরিজের টিকিট কিনি। দাম পড়ে ষাট টাকা। অভাবের সংসারে এই টাকার দাম অনেক। তারপর ছাগল চড়াতে যাই। বাড়ি এসে খেতে বসে মিলিয়ে দেখি আমি ফার্স্ট প্রাইজ পেয়েছি!” লটারিতে কোটিপতি হতেই অবশ্য় শান্তি গিয়েছে। নিরাপত্তার অভাবে ভুগে ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ভাইপোকে নিয়ে থানায় চলে আসেন। তাঁর আবেদনে সাড়া দেয় পুলিশ। তারপর থেকে ফাঁড়িতেই রয়েছেন।
Ausgram এখনও টিকিট জমা করতে পারেননি বলে একটু চিন্তায় আছেন। কিন্তু কী করবেন এত টাকা দিয়ে? বামাচরণ জানালেন, পঞ্চাশ লাখ টাকা এমআইএস করবেন। একটা বাড়ি করবেন। দু বিঘা জমি কেনারও ইচ্ছে আছে। তবে যাই করুন গ্রামেই থাকবেন। টাকা এসেছে বলেই শহরে গিয়ে বাস করতে চান না লক্ষ্মীর এই বরপুত্র। বামাচরণ মেটের বাড়িতে রয়েছেন বিধবা মা, স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে। সামান্য কিছুটা জমি ভাগচাষ করেন। পাশাপাশি জনমজুরি করেন। জমিতে দেওয়ার জন্য পটাশ সার কিনতে স্ত্রী বোধনদেবী তাঁর হাতে ১০০ টাকা দিয়েছিলেন।
ওই টাকা নিয়ে তিনি সার কিনতে যান। গিয়ে দেখেন দোকান বন্ধ রয়েছে। তাই বামাচরণ ফিরে আসছিলেন। ঠিক তখনই দেখেন একজন লটারির টিকিট বিক্রেতা সাইকেলে চড়ে টিকিট বিক্রি করছেন। তাঁকে দেখে সেখানেই দাঁড়িয়ে পড়েন বামাচরণ। মাঝেমধ্যে টিকিট কাটার অভ্যাস ছিল। তাই মন উসখুস করে ওঠে। স্ত্রীর দেওয়া সারের টাকা ভেঙে ৬০ টাকা দিয়ে টিকিট কিনে ফেলেন। বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে শুধু জানান, “সারের দোকান বন্ধ। পরে এনে দেব।” দুপুর দুটো নাগাদ ভাত খেতে বসেন বামাচরণ।
Ausgram তারপর নিজের স্মার্টফোনেই টিকিটের নম্বর মিলিয়ে দেখতে গিয়ে চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। দেখেন দুটির মধ্যে একটি টিকিটে প্রথম পুরস্কার লেগেছে। খাওয়া কার্যত মাথায় ওঠে। স্ত্রীকে বলেন। স্ত্রী প্রথমে বিশ্বাস করেননি। হেসে ওঠেন বোধনদেবী। কোনওরকমে দুই তিন গ্রাস ভাত খেয়ে সটান ছোড়া পুলিশ ফাঁড়িতে চলে আসেন। ফাঁড়ির ইনচার্জ ত্রিদিপ রাজকে জানান বিষয়টা।
পুলিশও নিরাপত্তার খাতিরে ফাঁড়িতে রেখে দিয়েছে তাকে। বাড়ি থেকে স্ত্রী দুবেলা খাবার দিয়ে যাচ্ছেন বামাচরণকে। বামাচরণ বলেন, “ব্যাঙ্কে নতুন অ্যাকাউন্ট করতে হবে। টিকিট ভাঙানোর জন্য কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। বাড়িতে থেকে এসব করার সাহস পাচ্ছি না।” তাঁর স্ত্রী বোধনদেবী বলেন, “সারাজীবন অভাবের মধ্যেই কাটিয়েছি। মা লক্ষীর কৃপায় এত টাকার পুরস্কার জেতার পর এবছরেই বাড়িতে লক্ষীপুজো করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু স্বামীকে থানায় থাকতে হচ্ছে। তাই পরের বছর মায়ের পুজো করব।”
আরও পড়ুন জেলার খবর কলকাতা দক্ষিণ ২৪ পরগনা উত্তর ২৪ পরগনা হাওড়া নদিয়া মুর্শিদাবাদ পূর্ব বর্ধমান পশ্চিম বর্ধমান ঝাড়গ্রাম পূর্ব মেদিনীপুর পশ্চিম মেদিনীপুর পুরুলিয়া বাঁকুড়া হুগলি বীরভূম মালদহ উত্তর দিনাজপুর দক্ষিণ দিনাজপুর জলপাইগুড়ি শিলিগুড়ি আলিপুরদুয়ার কোচবিহার