Bangladesh ভারতের মাটি থেকে আমেরিকায় আয়োজিত এক আলোচনাসভায় ভার্চুয়াল বক্তৃতা করলেন বাংলাদেশের Bangladesh প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে দুষেছেন তিনি। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর মন্তব্য, ‘‘ইউনূসের পরিকল্পনাতে গণহত্যা চলছে Bangladesh বাংলাদেশে।’’
চিন্ময়ের গ্রেপ্তারিতে আন্তর্জাতিক মহলে এমনিতেই চাপে ছিল ইউনুস সরকার। সেই চাপ আরও বেড়েছে মঙ্গলবার আদালতে চিন্ময়ের তরফে আদালতে কোনও আইনজীবী উপস্থিত থাকতে না পারায়। অভিযোগ, চিন্ময় যাতে আইনি সহায়তা না পান সেটা নিশ্চিত করতে তাঁর আইনজীবীদের মারধর করা হয়, এমনকী বহু হিন্দু আইনজীবীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাতে আন্তর্জাতিক চাপ আরও বেড়েছে বাংলাদেশ সরকারের সমন্বয়কদের উপর। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা যাচ্ছেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্ত্রী। এদিকে দেশের অন্দরেও বাড়ছে চাপ। একজোট হয়ে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন সংখ্যালঘু হিন্দুরা। এই পরিস্থিতিতে চিন্ময়কে কোনওভাবে মুক্তি দেওয়া যায় কিনা, ভেবে দেখার ইঙ্গিত দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
মজার কথা হল, চিন্ময় মুক্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ইউনুস সরকার এমন কিছু সংগঠনের সঙ্গে পরামর্শ করতে চাইছে যারা নিজেরাই প্রবল চিন্ময় বিরোধী। এই জামাত-হেফাজতই বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবিতে সবচেয়ে সোচ্চার ছিল। কূটনৈতিক মহল মনে করছে, ইসলামাবাদের মদতে জামাত-হেফাজতই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাংলাদেশে হিন্দু বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করছে। এমনকী, যে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে ইউনুস আলোচনা করতে চাইছেন, সেগুলির অন্যতম বিএনপিও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে সরব। এই সব সংগঠনের সঙ্গে চিন্ময় মুক্তি নিয়ে পরামর্শ করা অনেকটা বিড়ালকে মাছ পাহারার দায়িত্ব দেওয়ার মতোই।
সনাতনী নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই চিন্ময়-সহ ইসকনের সঙ্গে যুক্ত ১৭ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ়’ করার নির্দেশ দিল বাংলাদেশ সরকার। ৩০ দিনের জন্য অ্যাকাউন্টগুলি ‘ফ্রিজ়’ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের আর্থিক গোয়েন্দা শাখা। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারি, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপরে নিপীড়নের প্রতিবাদ শুরু হয়েছে পশ্চিমি দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। আমেরিকার ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশনের প্রাক্তন কমিশনার জনি মুর দাবি করেছেন, মুহাম্মদ ইউনূস ব্যর্থ হচ্ছেন। এ-দিনও রাতে চট্টগ্রামে সংখ্যালঘুদের তিনটি ধর্মস্থানে হামলা চালায় জনতা।
চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারি তথা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিপীড়ন নিয়ে আজ সরব হয়েছেন আমেরিকার ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশনের প্রাক্তন কমিশনার জনি মুর ও ব্রিটিশ এমপি বব ব্ল্যাকম্যান। মুরের মতে, স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস ব্যর্থ হচ্ছেন। কারণ, বাংলাদেশে এমন কোনও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নেই যারা বিপন্ন বোধ করছে না। মুরের মতে, “এটা কেবল সংখ্যালঘু নয়, গোটা বাংলাদেশের অস্তিত্বের সঙ্কট। সরকারের প্রথম কর্তব্য হল বিপন্নদের সুরক্ষা দেওয়া।” গোটা বিশ্বের খ্রিস্টান সম্প্রদায় চিন্ময়কৃষ্ণের পাশে আছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
আজ বিষয়টি নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সরব হন এমপি বব ব্ল্যাকম্যান। তিনি বলেন, “ইসকন ব্রিটেনের এলসট্রিতে ভক্তিবেদান্ত ম্যানর পরিচালনা করে। তারাই ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় হিন্দু সংগঠন। এই মুহূর্তে তাদের এক নেতা বাংলাদেশে হেফাজতে রয়েছেন।” আজ চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারি ও সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচারের প্রতিবাদ জানিয়েছে কলকাতা ইসকন। আজ কলকাতার ইসকন মন্দিরে খোল-করতাল বাজিয়ে নামগানের মধ্যে দিয়ে এ সবের প্রতিবাদ জানানো হয়। প্রতিবাদকারী ভক্তদের হাতে ছিল বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড। সেগুলিতে লেখা ছিল ‘উই আর নট টেররিস্টস’। কলকাতা ইসকনের ভাইসপ্রেসিডেন্ট রাধারমন দাস বলেন, “বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপরে যাতে অত্যাচার না হয়, সে দেশে যাতে শান্তি ফিরে আসে এবং চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে যাতে মুক্তি দেওয়া হয়, সে জন্য আমরা প্রার্থনা করলাম।
বাংলাদেশের হিন্দুদের পাশে আছি, এই বার্তাও দিলাম।” অন্য দিকে গত কাল কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনে ‘বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ’ নামে সংগঠনের ‘হিংসাত্মক’ বিক্ষোভের কড়া সমালোচনা করেছে ইউনূস সরকার। তাদের বক্তব্য, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ডেপুটি হাইকমিশনের সীমানায় পৌঁছে যায়। সেখানে Bangladesh বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও বাংলাদেশ সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা (মুহাম্মদ ইউনূস)-এর কুশপুত্তলিকা দাহ করে তারা। এই ধরনের ঘটনা রুখতে ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নয়াদিল্লিকে অনুরোধ করেছে ঢাকা। সনাতনী হিন্দুদের বিক্ষোভের ফলে ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলার মনু ল্যান্ড কাস্টম স্টেশন দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আমদানি রফতানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছেন ত্রিপুরার ব্যবসায়ীরা। তাঁদের বক্তব্য, চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে আন্দোলনকে তাঁরাও সমর্থন করেন। কিন্তু অন্য চেকপোস্ট দিয়ে আমদানি রফতানি চলছে। তবে কেবল মনু ল্যান্ড কাস্টম স্টেশন নিয়ে ব্যবসা বন্ধ করার অর্থ কী?
আরও পড়ুন জেলার খবর কলকাতা দক্ষিণ ২৪ পরগনা উত্তর ২৪ পরগনা হাওড়া নদিয়া মুর্শিদাবাদ পূর্ব বর্ধমান পশ্চিম বর্ধমান ঝাড়গ্রাম পূর্ব মেদিনীপুর পশ্চিম মেদিনীপুর পুরুলিয়া বাঁকুড়া হুগলি বীরভূম মালদহ উত্তর দিনাজপুর দক্ষিণ দিনাজপুর জলপাইগুড়ি শিলিগুড়ি আলিপুরদুয়ার কোচবিহার