বিশ্বের কনিষ্ঠতম হিসেবে ফিডে রেটিং পেয়ে বিশ্বরেকর্ড করল বাংলার মাত্র সাড়ে তিন বছরের খুদে Dabaru দাবাড়ু। কৈখালির বাসিন্দা অনীশ সরকার ভেঙে দিল ভারতেরই তেজস তিওয়ারির রেকর্ড। তেজস এই রেকর্ড করেছিল পাঁচ বছর বয়সে। অনীশকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত তার কোচ দিব্যেন্দু বড়ুয়া। সেন্ট জেমস স্কুলের লোয়ার নার্সারির ছাত্র অনীশ। অনীশের বয়স ৩ বছর ৮ মাস ১৮ দিন। মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম তার। বাবা স্কুলে অঙ্কের শিক্ষক। মা গৃহবধূ। অনীশকে নিয়েই সময় কাটে মায়ের। অনীশের প্রীয় বিষয় অঙ্ক। সেকারণে গত বছর পুজোর সময় অনীশের মামা তাকে উপহার দিয়েছিলেন দাবা বোর্ড।
আর সেই উপহার বোধ হয় জীবনটাই বদলে দিল। এখন দাবাই তার ধ্যানজ্ঞান। সারা দিন কেটে যায় পড়াশোনা আর দাবা নিয়েই। রাজ্যের অনূর্ধ্ব-৯ দাবা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল অনীশ। সেই প্রতিযোগিতায় রেটিং থাকা দুই Dabaru দাবাড়ুকে হারিয়ে সকলকে চমকে দেয় সে। যাদের হারিয়েছে সে, তাদের বয়স ছ’বছরের ওপরে। তাতেই বাজিমাত। ১৫৫৫ ফিডে এলো রেটিং পেয়েছে। সে এতই ছোট যে চেয়ার বসে ঘুঁটিতে হাত পায় না। চেয়ারের উপর হাঁটু মুড়ে বসে খেলতে হয়। অনীশের মা বললেন, “অন্য কোনও খেলনার থেকে দাবাটাই মনে হয়েছিল বেশি সুরক্ষিত।
ও তো খুব ছোট, কোনও কিছু পেলেই মুখে দেওয়া অভ্যেস। দাবার ঘুঁটিগুলো বড়, তাই মুখে দিলেও গিলে ফেলতে পারবে না। সেই কারণেই দাবা নিয়ে বসিয়ে দেওয়া হত ওকে। ইউটিউব দেখে দেখে খেলা শিখত। আমি খেলতে বসলে ওর সঙ্গে পাঁচ দানও খেলতে পারি না। দাবার প্রতি এই ভালবাসা দেখেই দিব্যেন্দু বড়ুয়ার কাছে নিয়ে যাই। ওঁর হাতেই তৈরি হচ্ছে অনীশ।” অনীশের সাফল্যে খুশি প্রশিক্ষক দিব্যেন্দু বড়ুয়া। বাংলার গ্র্যান্ডমাস্টার প্রথমে অনীশকে প্রশিক্ষণ দিতে চাননি। কারণ অ্যাকাডেমিতে পাঁচ বছরের কম বয়সি কাউকে নেওয়া হয় না।
কিন্তু দিব্যেন্দু অবাক হয়ে যান অনীশের খেলা দেখে। অ্যাকাডেমিতে নেওয়ার আগে তার পরীক্ষা নিয়েছিলেন দিব্যেন্দু। সব পরীক্ষাতেই পাশ করে অনীশ। দিব্যেন্দু বললেন, “প্রথম দিন আমি পরীক্ষা নিয়েছিলাম, এখন সেই ছেলে আমাকে বিভিন্ন ঘুঁটি সাজিয়ে দিয়ে পরীক্ষা নেয়।” দিব্যেন্দু বললেন, “ও বিস্ময় বালক। মাত্র ক’মাস হয়েছে খেলছে। তাতেই বুঝিয়ে দিচ্ছে ও কতটা প্রতিভাধর। তবে ফিডে রেটিং পাওয়াটাই তো সব নয়। এখন অনেকটা পথ যাওয়া বাকি। অনীশ সেটা পারবে। ওর শেখার ইচ্ছা আছে। এখন ও জানতে চায় বিভিন্ন জিনিস। শিখতে চায়। আমাকে জিজ্ঞেস করে দাবা খেলার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন শব্দের মানে। ও হয়তো এখনই সবটা বোঝে না। কিন্তু বোঝার ইচ্ছেটা রয়েছে পুরো। দিনে সাত-আট ঘণ্টা অ্যাকাডেমিতে কাটায়। খেলা ছেড়ে উঠতে চায় না। আমি মাঝেমাঝে বাড়িতেও ডেকে নিই। আশা করছি আরও অনেক সাফল্য পাবে অনীশ।”
আরও পড়ুন জেলার খবর কলকাতা দক্ষিণ ২৪ পরগনা উত্তর ২৪ পরগনা হাওড়া নদিয়া মুর্শিদাবাদ পূর্ব বর্ধমান পশ্চিম বর্ধমান ঝাড়গ্রাম পূর্ব মেদিনীপুর পশ্চিম মেদিনীপুর পুরুলিয়া বাঁকুড়া হুগলি বীরভূম মালদহ উত্তর দিনাজপুর দক্ষিণ দিনাজপুর জলপাইগুড়ি শিলিগুড়ি আলিপুরদুয়ার কোচবিহার