মালদায় আদিবাসী মহিলাদের ঋণের পরিবর্তে অসুস্থ শূকরছানা বিলির অভিযোগ

মালদায় আদিবাসী মহিলাদের ঋণের পরিবর্তে অসুস্থ শূকরছানা বিলির অভিযোগ

মালদায় অসুস্থ শূকরছানা দিয়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের স্বনির্ভর গোষ্ঠী মহিলাদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। এমনই অভিযোগ উঠেছে খোদ BDO-র বিরুদ্ধে। আর আদিবাসী মহিলাদের পাশাপাশি এবার এই অভিযোগে সরব হয়েছেন তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। শুধু অভিযোগ তোলা নয়, ঘটনার তদন্তে একটি তদন্তকারী টিমও গঠন করেছেন তিনি।

পুরাতন মালদা আদিবাসী অধ্যুষিত যাত্রাডাঙ্গা এলাকায় এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।  জানা গিয়েছে, পুরাতন মালদার যাত্রাডাঙ্গা এলাকায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের TSP ঋণ হিসাবে ১২,৫০০ টাকার পরিবর্তে শূকরছানা প্রদান করেছে ব্লক প্রশাসন। সেটা নিয়েই গণ্ডগোলের সূত্রপাত। আদিবাসী স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের অভিযোগ, শূকরছানার পরিবর্তে তাঁরা প্রাপ্য ১২,৫০০ টাকা নিতে চান।

কিন্তু ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁদের শূকরছানা প্রতিপালনের জন্য দেওয়া হবে। চলতি মাসের ১ তারিখ প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের বাড়ি-বাড়ি পৌঁছেও দেওয়া হয় শূকরছানা। কিন্তু শূকরছানাগুলি অসুস্থ, ঠিকভাবে চলতেও পারছে না বলে অভিযোগ।  ইতিমধ্যে কয়েকটি ছানা মারাও গিয়েছে। যা নিয়ে আদিবাসী স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও ব্লক প্রশাসনের মধ্যে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার গণ্ডগোল বাধে।

কিন্তু বুধবার সেই গণ্ডগোল চরমে ওঠে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা পুরাতন মালদা ব্লক অফিসের সামনে বিক্ষোভে সামিল হলে তাঁদের তালাবন্ধ করে ব্লক অফিসের ভিতরে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। পরবর্তীতে এই তালা খুলতে গেলে ব্লক অফিসের কর্মীদের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলারা।

গোটা ঘটনায় সরাসরি BDO-র বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তাঁরা। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের অভিযোগ, আদিবাসী অধ্যুষিত হওয়ায় তাঁদের অবহেলা করা হচ্ছে।  যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে পুরাতন মালদা ব্লক আধিকারিক ইরফান হাবিবের পালটা দাবি, ব্লকের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে এবং তাঁকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

তবে এব্যাপারে আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন পুরাতন মালদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মৃণালিনী মণ্ডল মাইতি। BDO-কে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁর পালটা অভিযোগ, “BDO সাহেব নিজেই আদিবাসী মহিলাদের বাড়িতে গতকাল সন্ধ্যাবেলা গিয়েছিলেন এবং তাঁদের হুমকি দিয়ে এসেছেন যে, যদি এই শূকরছানা তাঁরা গ্রহণ না করেন তাহলে তাঁদের সমস্ত প্রকল্প থেকে বঞ্চিত করে রাখা হবে।” পঞ্চায়েতের তরফে তদন্ত টিম গঠন করে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মৃণালিনী মণ্ডল মাইতি।