বাংলাদেশের চন্দ্রনাথ মন্দিরে নায়েরি তাকবির স্লোগান তুলে হামলা, আহত ১০

বাংলাদেশের চন্দ্রনাথ মন্দিরে নায়েরি তাকবির স্লোগান তুলে হামলা,  আহত ১০

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ মন্দিরের নায়েরি তাকবির স্লোগান ও মন্দিরের হামলা । সীতাকুণ্ড থানাধীন চন্দ্রনাথ পাহাড়ের এক নম্বর গেটে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সনাতন ধর্মালম্বীদের অন্যতম প্রধান তীর্থস্থান চন্দ্রনাথ ধামের পবিত্রতা রক্ষার জন্য ব্যানার ফেস্টুন লাগানোর সময় একদল যুবক নায়েরি তাকবির স্লোগান তুলে লাঠি নিয়ে এসে অতর্কিত হামলা চালায়। এই হামলায় তীর্থ যাত্রীসহ ১০জন আহত হয়েছে।  

স্থানীয়রা আরও জানান, গত কয়েক বছর ধরে এই তীর্থস্থান নিয়ে নানাবিধ চক্রান্ত চলছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিককালে কেউ কেউ এটাকে ট্যুরিস্ট স্পট হিসেবে এমন ভাবে উপস্থাপন করছে তা খুবই লজ্জা জনক। যার ফলশ্রুতিতে কতিপয় সাম্প্রদায়িক মহল তীর্থের ভাবগাম্ভীর্যতা নষ্ট করার পায়তারা চালাচ্ছে। বিফ পার্টি সহ বিভিন্ন উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাচ্ছে।

তীর্থ এলাকায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে , যা স্থানীয় এবং সমগ্র বিশ্বের সর্বস্তরের হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানছে ও স্থানীয় জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করছে। এসব ঘটনা এলকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের কারণ হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা। তবে এসব ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন। সর্তক করা হয়েছে চন্দ্রনাথ মন্দিরে থাকা ফাঁড়ি পুলিশদের।

গত বছর চন্দ্রনাথ পাহাড়ে নামায দেওয়া এবং মসজিদ স্থাপনের দাবি জানিয়ে পুলিশের হাতে আটক হন এক যুবক। এরপর চন্দ্রনাথ পাহাড়ে উঠার আগে গেইটের ব্যবস্থা ও সিসিটিভি ক্যামরা স্থাপন করে মন্দির কমিটি। তবে এসব নিরাপত্তার পর ফের মন্দির এলাকায় ইসলাম ধর্মীয় স্লোগান দিতে দেখা যায় টুপি পড়া একাধিক মুসলিম যুবককে। এছাড়াও ‘ Raihan Riad’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে চন্দ্রনাথ মন্দিরে ‘বিফ বার-বি-কিউ পার্টি’ নামে এটি ফেসবুক গ্রুপ খোলা হয়। যদিও সমালোচনার পর গ্রুপটি ডিলিট করে দেওয়া হয়।

চন্দ্রনাথ মন্দির পরিচালনার জন্য যে কমিটি রয়েছে সেটি ‘স্রাইন’ কমিটি নামেই পরিচিত। বিভিন্ন পেশাজীবী ও স্থানীয় নেতারা ভোটের মাধ্যমে এই কমিটির দায়িত্বে যান। গত কমিটির মেয়াদকাল শেষ হওয়ায় এবং নতুন কমিটি গঠন না হওয়ায় বর্তমানে কমিটিহীন আছে মন্দিরটি। বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড় হিন্দুদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্দির ও  তীর্থক্ষেত্র। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মান্য করেন যে কলিযুগে মহাদেব শিব এখানে বিরাজ করবেন এমন প্রতিশ্রুতি তিনি ব্যাসদেবকে দিয়েছিলেন।

শুধু তাই না এই সীতাকুণ্ড পাহাড়ে রাম, লক্ষ্মণ, সীতা এখানে ছিলেন। আরও অনেক ধর্মীয় তাত্বিক ব্যাখ্যা রয়েছে। বেশ কিছু  বছর ধরে এখানে বিধর্মীদের আসা যাওয়া বেড়েছে বহুগুন। এক বছর আগে দ্যা নিউজ এর বার্তা সম্পাদক সহ তাদের  প্রতিনিধি দল চন্দ্রনাথ পাহাড়ে ওঠার সময় উপরে মন্দিরের মাইকিং শুনতে পান। মাইকিংয়ে বলা হচ্ছে মন্দিরে ভদ্র পোশাক পরে আসুন, মন্দিরের পবিত্রতা রক্ষা করতে শালীনতা বজায় রাখুন। ১৩০০ ফুট ওপরে মন্দিরে পৌঁছালে পুরোহিত সাংবাদিক দেখে মনের সব কষ্ট উজাড় করে দিলেন। তিনি জানালেন জানিনা এভাবে কতদিন মন্দির রক্ষা করতে পারবো। যত জন হিন্দু ওঠে তার থেকে ৩ গুন বেশি ওঠে মুসলিম। শুধু তাই না এখানে এসে বিভিন্ন রকম অশালীন ব্যবহার করে যুবক-যুবতীরা।