ত্বকের সব সমস্যার সমাধানের অশ্বগন্ধা

ত্বকের সব সমস্যার সমাধানের  অশ্বগন্ধা

ত্বকের জ্বালা. ব্রণ বা পিগমেন্টশনের মতো ত্বকের সমস্যা নিয়ে চিন্তিত? এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কোনও মির‍্যাকল ভেষজের খোঁজ করছেন? অনেক মহিলাই ত্বকের সমস্যা সমাধানের জন্য ঘি খাওয়া বিশ্বাস করেন। ঘিয়ের উপকারিতা অবশ্যই রয়েছে। তবে তাতে ওজন নিয়ন্ত্রণের ভারসাম্য বজায় রাখা দুষ্কর হয়ে পড়ে। তাই ঘি পরিমাণ মত খাওয়া উচিত। ত্বকের জন্য ঘি খাওয়া সাময়িক সমাধানের জন্য ভাল, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের মূলমন্ত্র কোথায় পাবেন?ত্বকের জন্য অশ্বগন্ধা একটি অলৌকিক ভেষজ।

অ্যান্টি-এজিং ভেষজটি ত্বককে কোমল ও লাবণ্যে ভরিয়ে তোলে। ত্বকের ছিদ্রপথগুলি পরিস্কার করে দাগহীন ও উজ্জ্বল ত্বকে পরিণত করে। মহিলাদের ত্বকের জন্য অশ্বগন্ধা হল একটি মোক্ষম উপকরণ। করটিসল, স্ট্রেস হরমোনের জন্য দায়ী ত্বকের সমস্যাগুলিকে এক নিমেষে দূর করতে অশ্বগন্ধার ব্যবহার অপরিহার্য। অশ্বগন্ধা কী? অশ্বগন্ধা একটি ঔষধি গাছ, যা ভারতীয় জিনসেং নামেও পরিচিত।

অ্যাডাপ্টোজেন হিসাবে এটিকে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, যার অর্থ হল এটি সমস্ত ধরণের চাপকে প্রতিরোধ করে- তা শারীরিক, জৈবিক এবং রাসায়নিকই হোক না কেন। ত্বকে অশ্বগন্ধার উপকারিতা অশ্বগন্ধার অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। এটি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা নিরাময় করতে সক্ষম। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, অশ্বগন্ধা বডি ওয়াশ, অশ্বগন্ধা সাবান ইত্যাদির আকারে বহুগুণ সুবিধার কারণে এই প্রাচীন ভেষজটিকে আধুনিকীকরণ করা হয়েছে।

অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি: ব্রণের প্রবণতা কমাতে ও ত্বকের জ্বালাভাব কমাতে অশ্বগন্ধা দারুণ কার্যকরী। ত্বকের উপর সৃষ্টি হওয়া বিরক্তিকর ফুসকুড়ি. লালভাব, ফোড়া নিরাময় করতেও সক্ষম। স্কিন স্ট্রেস- কেরোটোসিস একটি গুরুতর ত্বকের অবস্থা যা আপনার ত্বককে শুষ্ক এবং রুক্ষ করে তোলে। যার ফলে কালো দাগ, চোখের নীচে কালোভাব এবং বলিরেখা দেখা দেয়। অশ্বগন্ধায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের স্ট্রেস সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যা দূর করে। ত্বককে শিথিল করে, কেরাটোসিসের খারাপ প্রভাব দূর করতে সাহায্য করে।

তাতে ত্বক হয়ে ওঠে নরম ও উজ্জ্বল। ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমায় আপনার যদি তৈলাক্ত ত্বকের ধরন হয়, তাহলে কোনও কঠিন রাসায়নিকযুক্ত পণ্য়ের পরিবর্তে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করতে পারেন। অশ্বগন্ধা প্রাকৃতিকভাবে তেল নিঃসরণ রোধ করে, যার কারণে তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা কমে। অশ্বগন্ধার উপাদানগুলি ত্বক থেকে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা ছাড়াই ত্বককে শান্ত, পরিষ্কার এবং তেলমুক্ত করে।

অ্যান্টি-এজিং স্কিনকেয়ার না নেওয়া ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়ছে? অশ্বগন্ধায় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা ফ্রি র‍্যাডিক্যালের সঙ্গে মোকাবিলা করে ত্বকের লাবণ্য ফিরিয়ে দেয়। সাময়িককালের জন্য, স্থায়ীভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে পারে ভেষজ উপাদানটি। প্রাকৃতিক তেলেকর জোগান দিয়ে ত্বককে কোমল ও মসৃণ করে তোলে। স্কিন হাইড্রেশন শুষ্ক ত্বক থেকে মুক্তি পেতে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করুন। ত্বককে ময়েশ্চারাইড করতে ও মসৃণ-কোমল রাখতে সাহায্য করে।

এটি হায়ালুরানান উত্‍পাদনে সাহায্য করে। যা রুক্ষ ত্বক নিরাময় করে ও হাইড্রেটেড রাখে। বিভিন্ন উপায়ে অশ্বগন্ধা প্রয়োগ করতে পারেন- – একটি সাধারণ ফেসপ্যাক তৈরি করে টপিক্যালি অশ্বগন্ধা ব্যবহার করতে পারেন। নিখুঁত পরিমাণে জলের সঙ্গে অশ্বগন্ধা পাউডার মিশিয়ে ত্বকে লাগান। – অশ্বগন্ধা ব্যবহার করার আরেকটি পদ্ধতি রয়েছে। এক চা চামচ আদা গুঁড়ো, দুই চা চামচ অশ্বগন্ধা গুঁড়ো এবং এক চা চামচ শুকনো লেবুর খোসার গুঁড়ো একটি কাপ বা পাত্রের মধ্যে নিয়ে আভেনে গরম করুন।

তাতে এক কাপ জল দিন। ভাল করে ফুটে উঠলে তা নামিয়ে ঠান্ডা করতে দিন। ঠান্ডা হওয়ার পর ত্বকে ব্যবহার করুন। এছাড়া অশ্বগন্ধা তেল ব্যবহার করতে পারেন। স্ট্রেস কমাতে, উদ্বেগ, রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রায় সব মহিলার ক্ষেত্রেই অশ্বগন্ধা তেল ব্যবহার করা উচিত। নারকেল বা আমন্ড ওয়েলের সঙ্গে অশ্বগন্ধা তেল মিশিয়ে ত্বকে আলতোভাবে প্রয়োগ করতে পারেন।