অর্থের জোগান নেই তাই পূর্ব বর্ধমানের অঙ্গনওয়াড়িতে বন্ধ খাবার দেওয়া

অর্থের জোগান নেই তাই পূর্ব বর্ধমানের অঙ্গনওয়াড়িতে বন্ধ খাবার দেওয়া

অর্থের জোগান নেই। তাই বন্ধ হয়ে গেল অঙ্গনওয়াড়ি থেকে শিশু, প্রসূতি ও গর্ভবতীদের খাবার দেওয়া। একটি, দুটি নয়… ৫৩৪ টি অঙ্গনওয়াড়িতে একই ছবি। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের। প্রায় দুই মাস ধরে রান্নার জন্য বকেয়া অর্থ না পাওয়ায় ব্লকের অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রগুলিতে রান্না করা খাবার দেওয়া বন্ধ করে দিলেন অঙ্গনওয়ারি কর্মীরা।

তাঁদের বক্তব্য, লকডাউনের পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রগুলি খোলার পর থেকেই কর্মী ও সহায়িকারা নিজেদের টাকায় সবজি, ডিম সহ আনুষাঙ্গিক বাজার নিজেদের টাকায় কিনে আনছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ দুই মাস খরচের কোনও টাকা তাঁরা পাচ্ছেন না। মুদিখানা ও সবজির দোকানে তাঁদের বেশ খানিকটা করে টাকা ধার হয়ে গিয়েছে।

তাই বাধ্য হয়েই ব্লক জুড়ে সমস্ত অঙ্গনওয়ারি কর্মীরা শনিবার থেকে তাদের সেন্টারগুলিতে রান্না করা বন্ধ করে দিয়েছেন। এদিকে এই সিদ্ধান্তের ফলে সমস্যার মধ্যে পড়েছেন অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের শিশু থেকে গর্ভবতী ও প্রসূতি মহিলারা। সোমবার থেকে শনিবার, সপ্তাহে ছয় দিন এই কেন্দ্রগুলি থেকে রান্না করা খাবার দেওয়া হত। কোনও দিন ভাত, ডিম, সবজি।

আবার কোনও দিন দেওয়া হত খিচুড়ি। এই কেন্দ্রগুলিতে ছয় বছর বয়স পর্যন্ত শিশু এবং গর্ভবতী ও প্রসূতি মহিলারা ছয় মাস পর্যন্ত পুষ্টিকর খাবার পেয়ে থাকেন। আজ থেকে খাবার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যার মধ্যে পড়েছেন এরা সকলেই। অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, “দীর্ঘদিন মুদিখানা দোকানে ধার হয়ে যাওয়ায় দোকানদাররা ধার দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

স্বল্প মাইনের টাকা থেকে তারা মুদিখানা ও সবজি বাজার করে আসছিলেন। প্রায় সকল অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রগুলিতেই সবজি ও মুদি দোকানে ধার পড়ে রয়েছে। কারও পাঁচ হাজার, আবার কারও ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত ধার হয়ে গিয়েছে। প্রতিকার চেয়ে বিডিও এবং সিডিপিওকে ডেপুটেশন জমা দেন অঙ্গনওয়ারি কর্মী ও শিক্ষিকারা। তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি।”

এমত অবস্থায় কোনও ভাবেই আর তারা খাবার পরিবেশন করতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন অঙ্গনওয়ারি কর্মীরা। এই সমস্যা নিয়ে কর্মীরা ব্লকের বিডিও এবং জামালপুর সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। কিন্তু সুরাহা হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই এই সিদ্ধান্ত বলে জানাচ্ছেন অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের কর্মীরা। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা জানান, “অ্যাকাউন্ট জনিত কিছু সমস্যার জন্য এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে টাকা চলে এসেছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই সমস্যা মিটে যাবে।”