মালদায় পুলিশ মাটি পাচারকারীদের থেকে টাকা নিচ্ছেন, অভিযোগ তৃণমূল বিধায়কের

মালদায় পুলিশ মাটি পাচারকারীদের থেকে টাকা নিচ্ছেন, অভিযোগ তৃণমূল বিধায়কের

এবার হাটের মাঝে পুলিশকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক। টাকা নিয়ে বালি, মাটি মাফিয়াদের মদত দিচ্ছে মালদহের রতুয়া থানার আইসি। পাচার হয়ে যাচ্ছে নদীর থেকে তোলা হাজার হাজার ট্রলি বালি, মাটি। রতুয়ায় ফুলহার নদী বাঁধের মেরামতির কাজের সূচনা করতে গিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়।

বাঁধের মাটিকাটা নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও। ঠিক কী বলেছেন রতুয়ার বিধায়ক?‌ রতুয়ার সূর্যপুরে ফুলহার নদী বাঁধ সংস্কারের সূচনা করেন রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রীর সাবিনা ইয়াসমিন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন মালদহের জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মালতিপুরের বিধায়ক আবদুর রহিম বক্সীও।

সেখানেই তিনি বলেন, ‘‌আমি ডিএম–এসপি–ডিআইজি সকলকে বলেছি রতুয়ার আইসিকে সরিয়ে দিতে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। এদিকে নাককাটি সেতুর তলা থেকে রোজ হাজার হাজার ট্রাক মাটি পাচার হয়ে যাচ্ছে। এমন চললে বাঁধ‌ও থাকবে না, নাককাটি সেতুও শেষ হয়ে যাবে। আইসি সব জানে। মাটি পাচারকারীদের থেকে টাকা নিচ্ছেন।

ওঁর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদনাম হচ্ছে। এমন চলতে থাকলে আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানাব।’‌ যদিও পুলিশ কোনও অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত নয় বলে প্রতিক্রিয়া মালদহ জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতির।  কী বলছেন সেচ প্রতিমন্ত্রী?‌ ফুলহার নদী বাঁধ সংস্কারের জন্য ২৩ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।

এই বিষয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, ‘‌সেচ দফতরের বাঁধের নদীর পাড় থেকে মাটি তুলছে, এটা বিশাল একটা সমস্যা। ইটভাটার জন্য মাটি তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছে। কেউ প্রধানের ভাই, কেউ সভাপতির মামা, কেউ সভাধিপতির ভাইপো মাটি তুলে নিয়ে চলে যাবে তা কিন্তু আমরা আর বরদাস্ত করব না।’‌

যদিও বিধায়ক ও মন্ত্রীর বক্তব্য উড়িয়ে দিয়েছেন মালদহের পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি। তিনি ঠিক কী বলছেন?‌ পুলিশ সুপার বলেন, ‘‌আমি ব্যক্তিগতভাবে তদন্ত করে দেখেছি। পুলিশ কোনওভাবেই কোনও অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত নয়। উনি বলেছেন ঠিক আছে। তবে ওনার অভিযোগের কোনও ভিত্তি খুঁজে পাইনি। পুলিশ নির্দোষ।’‌ 

বিজেপি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, এই অভিযোগের দুটো দিক আছে। হয় তিনি সত্যি কথা বলে ফেলেছেন, আর না হলে কাটমানির ভাগ পাচ্ছেন না বলে মুখ খুলেছেন! উল্লেখ্য, যত দিন যাচ্ছে মালদহে নদী ভাঙন সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে নদী বাঁধের ধার থেকে মাটিকাটা ও বালি পাচারের কাজ। ফলে ভাঙন সমস্যা আরও প্রকট হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। এই পরিস্থিতিতে শাসক দলের বিধায়কের পুলিশ সম্বন্ধে মন্তব্য আলোড়ন তুলেছে জেলার রাজনীতিতে।