Harishchandrapur News | ঝাঁ চকচকে পশুদের হাসপাতাল থাকলেও নেই চিকিৎসক

Harishchandrapur News |  ঝাঁ চকচকে পশুদের হাসপাতাল থাকলেও নেই চিকিৎসক

 তনুজ জৈন   মালদা:    ঝাঁ চকচকে হাসপাতাল থাকলেও নেই চিকিৎসক,বেহাল অবস্থা মালদহের Harishchandrapur News হরিশ্চন্দ্রপুর পশু হাসপাতালের। দীর্ঘ দুই বছর ধরে এই হাসপাতালের চিকিৎসক নেই। এই দপ্তরের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের প্রাণী সম্পদ আধিকারিককে। মিলছে না পর্যাপ্ত চিকিৎসা এবং ওষুধ। গৃহ-পালিত পশুদের চিকিৎসা করাতে নিয়ে এসে জুটেছে অবহেলা।

অসুস্থ পশুদের নিয়ে চরম সংকটে এলাকার বাসিন্দারা। তাই বাধ্য হয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক প্রাণি-সম্পদ আধিকারিক কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকার বাসিন্দারা। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে Harishchandrapur News হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকা-জুড়ে। যদিও প্রাণি-সম্পদ আধিকারিকের সাফাই পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ রয়েছে কিন্তু চিকিৎসকের অভাব আছে ঠিকই তবুও চিকিৎসা ব্যবস্থা থেমে নেই। পাশাপাশি এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক।

লক্ষী ভান্ডার দিতে দিতে শেষ-মেষ শ্রীলংকার মত অবস্থা তৈরি করে দিবে এই রাজ্য-সরকার খোঁচা জেলা বিজেপি নেতৃত্বের, অন্যদিকে রাজ্যের শ্রীলংকার মত অবস্থা হবে না, তবে যে দিন দিন বিজেপি সরকার জিনিসের দাম বাড়াচ্ছে গোটা ভারত শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থায় পরিণত হয়ে যাবে সাফাই জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের। শুরু তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে হরিশ্চন্দ্রপুর পশু চিকিৎসালয় দীর্ঘ দুই বছর ধরে চিকিৎসক নেই। হরিশ্চন্দ্রপুর দু'নম্বর ব্লকের প্রাণি-সম্পদ আধিকারিক এই কেন্দ্রের দায়িত্বে রয়েছেন। যেখানে এই পশু হাসপাতালে এক জন চিকিৎসক,এক জন ফার্মাসিস্ট, এক জন করণিক এবং এক জন গ্রুপ ডি থাকার কথা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে দেখা যাচ্ছে পশু হাসপাতালের চিকিৎসক নেই। স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রাণি-সম্পদ কর্মীকে দিয়ে কোন রকমে পশুদের চিকিৎসার কাজ করানো হচ্ছিল।

কিন্তু এক বছর আগে সেই কর্মীও পদোন্নতি পেয়ে অন্য জায়গায় বদলি হয়ে গিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবে থমকে গিয়েছে চিকিৎসা পর্যাপ্ত ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি পশুদের নিত্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে আসছেন এলাকার বাসিন্দারা তাদেরকেও খালি হাতে ফেরত যেতে হচ্ছে। চিকিৎসার নামে জুটছে অবহেলা। চিকিৎসার অভাবে প্রচুর গৃহ-পালিত প্রাণীর এবছর অকালে মৃত্যু হয়েছে। এই পশু হাসপাতালে স্থায়ী চিকিৎসক না থাকায় পার্শ্ববর্তী ব্লকের প্রাণি-সম্পদ আধিকারিক এই দপ্তরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।

তিনি সপ্তাহে দুদিন এখানে আসেন। এদিকে এলাকার বাসিন্দারা নিজেদের গৃহ-পালিত পশুদের চিকিৎসা করাতে না পেরে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুব্ধ হয়ে আছে। দপ্তরে প্রাণি-সম্পদ আধিকারিক কে সামনে পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। এরপরই ওই আধিকারিক কে ঘিরে দেখায় বিক্ষোভ বাসিন্দারা। প্রসঙ্গত জেলায় চারটি স্টেট অ্যানিমেল হেলথ সেন্টার রয়েছে। এরমধ্যে মালদা,গাজোল,চাঁচল এবং হরিশ্চন্দ্রপুরে এই হেলথ সেন্টার গুলি আছে।

তার মধ্যে হরিশ্চন্দ্রপুরের এই স্টেট অ্যানিমেল হেলথ সেন্টারের অধীনে চারখানা সাব সেন্টার রয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর ১নম্বর ব্লকের অধীনে কুশিদা এবং তুলসিহাটা সাব সেন্টার। অন্যদিকে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের অধীনে ভালুকা ও খিদিরপুরে সাব সেন্টার রয়েছে।তবে চিকিৎসকের অভাবে থমকে রয়েছে ভালুকা কেন্দ্রেরও চিকিৎসা ব্যবস্থা।ঘটনার জেরে তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকা-জুড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ সামির উদ্দিন জানান আমরা দিনের পর দিন বাড়ির গবাদি পশুদের নিয়ে চিকিৎসার জন্য আসছি কিন্তু চিকিৎসকের চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে না ওষুধও নেই। খালি হাতে ফেরত চলে যাচ্ছি। আমরা চাই প্রশাসন এই ব্যাপারে নজর দিক। এলাকার বাসিন্দা রাজিকুল ইসলাম জানান এত বড় একটা পশু হাসপাতালে কোন চিকিৎসক নেই পর্যাপ্ত ওষুধ পাওয়া যায় না এটা ভেবেই অবাক লাগছে। বাড়ির গরু ছাগল হাঁস মুরগি কে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসছি কিন্তু চিকিৎসার পরিবর্তে জুটছে ঘাড় ধাক্কা। আমরা এই ব্যবস্থার তীব্র প্রতিবাদ করছি।

যদিও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত প্রাণি-সম্পদ আধিকারিক সুজয় তামাং বলেন জনগণের ক্ষুব্ধ হওয়াই স্বাভাবিক। কেন না তারা তাদের গবাদি পশুর জন্য চিকিৎসা পরিসেবা নিতে এসে তা পাচ্ছে না। সেখানে ইনচার্জ হিসেবে সপ্তাহে তিনদিন আমি বসছি। কিন্তু রিসেন্ট অর্ডারের কারণে সব স্টাফ অন্যত্র ট্রান্সফার হয়ে গেছে। এই সমস্যাটা যদিও অনেক দিনের নয়। ট্রান্সফার অর্ডারের কারণে লোকজন না থাকায় পরিসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই আমি আমার ডেপুটির ডিরেক্টর স্যারকে এই বিষয়ে জানিয়েছি।

এখানে একজন স্থায়ী স্টাফ পাঠালেই হাসপাতাল সঠিক ভাবে পরিসেবা দিতে পারবে। গোটা ঘটনায় তীব্র কটাক্ষ করেছে এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি জেলা সাধারণ সম্পাদক কিষান কেডিয়া জানান তৃণমূল গোটা রাজ্যটাকে লক্ষী ভান্ডার দিতে দিতে শেষ-মেষ শ্রীলংকার মত অবস্থা তৈরি করে দিবে এই সরকার। বলছে সরকারি কর্মীদের বেতন দিতে পারবে না। দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বন্ধ।

গোটা রাজ্য জুড়ে চলছে চরম অরাজকতা। আগামী নির্বাচনে মানুষের যোগ্য জবাব দেবে। পাল্টা এর উত্তরে তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক জম্বু রহমান জানান আমরা ঐ পশু হাসপাতালের চিকিৎসক নিয়োগের জন্য ইতিমধ্যেই জেলায় দরবার করেছি। তবে চিকিৎসা একদম যে হচ্ছে না এটা ভুল কথা। ওষুধ ঠিকঠাক ভাবে বিলি করা হচ্ছে। বিজেপি ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে। রাজ্যের শ্রীলংকার মত অবস্থা হবে না, তবে যে দিন দিন বিজেপি সরকার জিনিসের দাম বাড়াচ্ছে গোটা ভারত শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থায় পরিণত হয়ে যাবে।