মালদায় অস্ত্র হাতে রাম-নবমীর মিছিলে তৃণমূলের যুব ব্লক সভাপতি

মালদায় অস্ত্র হাতে রাম-নবমীর মিছিলে তৃণমূলের যুব ব্লক সভাপতি

তনুজ জৈন   মালদা:  আজ রবিবার মর্যাদা পুরুষোত্তম প্রভু শ্রী রামচন্দ্রের আবির্ভাব দিবস। সারা দেশ-জুড়ে ঘটা করে পালন হচ্ছে রাম-নবমী। বেরোচ্ছে বিভিন্ন মিছিল। ব্যতিক্রম নয় এই বাংলাও। তবে মূলত এতদিন দেখা গেছে বাংলায় রাম-নবমীর মিছিল হয়েছে বিজেপি নেতৃত্বদের তত্ত্বাবধানে। এমনকি এক সময় তৃণমূল বলেছিল রাম-নবমী বাংলার সংস্কৃতি নয়।

তৃণমূল বলেছিল ওরা জয় শ্রীরাম বললে আমরা পাল্টা জয় বাংলা বলবো। এমন কি বেশ কয়েকবার দেখা গেছে জয় শ্রীরাম ধ্বনি শুনে মুখ্যমন্ত্রী নিজের বিরক্ত হয়েছেন। নিজের মেজাজ হারিয়ে ফেলেছেন। তবে  Malda মালদা জেলার হরিশচন্দ্রপুর এলাকায় দেখা গেল উল্টো ছবি? শাসক দলের নেতা প্রতিনিধিরা যোগ দিলেন রাম-নবমীর মিছিল। এমনকি যুব তৃণমূল ২ ব্লক সভাপতি মনোতোষ ঘোষের হাতে ছিল ধারালো অস্ত্র।

আর যা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির কটাক্ষ ঠেলায় পড়ে গাছে উঠেছে বিড়াল। যদিও তৃণমূলের দাবি ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমরা সনাতনী তাই আমরা রাম-নবমী পালন করব এটাই স্বাভাবিক। ধারালো অস্ত্র ছিল প্রতীক হিসেবে। এ দিনের মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, হরিশচন্দ্রপুর অঞ্চল তৃনমূল চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা, হরিশ্চন্দ্রপুর ২ যুব সভাপতি মনতোষ ঘোষ, ছাত্র সভাপতি বিমান ঝা সহ তৃণমূলের একাধিক কর্মী সমর্থক।  এছাড়াও পা মিলিয়ে ছিল বহু রাম ভক্ত।

মিছিলের একাংশ শুরু হয় গড়গড়ি মাঠ থেকে।  আরেকটি শুরু হয় হরিশ্চন্দ্রপুর ডেলি মার্কেট থেকে। ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। দুটি মিছিলে মিলিত হয় হরিশ্চন্দ্রপুর শহীদ মোড়ে। তারপর আবার গিয়ে শেষ হয় গড়গড়ি মাঠে। হরিশ্চন্দ্রপুর যুব তৃণমূল ২ ব্লক সভাপতি মনোতোষ ঘোষ বলেন আজ রাম-নবমী প্রত্যেক বছরের মতো এ বছরও পালন করলাম আমরা,আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ধর্ম যার যার উৎসব সবার।আমরা প্রত্যেকে রামকে মানি এবং শ্রদ্ধা করি। হরিশ্চন্দ্রপুর তৃণমূল চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ধর্ম যার যার উৎসব সবার।

আমরা সনাতনী হিন্দু তাই এই মিছিলে অংশ গ্রহণ করেছি। আমরা প্রত্যেকে রামকে মানি এবং শ্রদ্ধা করি। রামচন্দ্র তো শুধু বিজেপির না। এটা ওদের রাজনৈতিক এজেন্ডা হতে পারে কিন্তু আমাদের ভক্তির ব্যাপার। উত্তর মালদা জেলা বিজেপির সম্পাদক রূপেশ আগারওয়াল বলেন, যখন বুঝতে পেরেছে এরা হরিশ্চন্দ্রপুর সদর থেকে ভোট পাচ্ছে না।

হিন্দু ভোট দূরে সরে যাচ্ছে। তখন এসব নাটক করছে। মানুষ এদের সব নাটক বুঝে গেছে। কোন লাভ হবে না। যে দলের নেত্রী জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়ার জন্য গুন্ডা বলেন জেলে ভরার কথা বলেন তারা আজ রাম-নবমী পালন করছে। সত্যি ঠেলায় পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে। বেশ কয়েক বছর ধরে এই রাজ্যে জয় শ্রীরাম স্লোগান নিয়ে রাজনৈতিক, মহল যথেষ্ট উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বেশ কয়েকবার মুখ্যমন্ত্রী কে ঘিরে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়া হলে তিনি মেজাজ হারিয়ে ফেলেন।

বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে বিজেপির জয় শ্রী রামের পাল্টা জয় বাংলা স্লোগান দেয় তৃণমূল। তবে এবার দেখা করল তৃণমূল নেতারা ধারালো অস্ত্র হাতে রাম-নবমীর মিছিল নেমে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিচ্ছেন। রাজনীতি সত্যি বড় বিচিত্র। একথা ঠিক মর্যাদা পুরুষোত্তম রাম কারোর একার নয়। তিনি সকলের। তাই রামচন্দ্রের আবির্ভাব দিবস পালন করার অধিকার সকলের আছে। কিন্তু বাংলার মধ্যে রাজনীতি ঢুকে গেছে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই শুরু হয়েছে চাপানউতোর।