Midnapore News | প্রণাম নিষেধের পোস্টার জেলা নেতার বাড়িতে

Midnapore News | প্রণাম নিষেধের পোস্টার জেলা নেতার বাড়িতে

 শত অনুরোধেও কমছে না হিড়িক। কেউ হাঁটু মুড়ে, কেউ নিচু হয়ে, কেউ আবার সাষ্টাঙ্গে। বড় পদে যাওয়ার পরে ভিড় বেড়েছে শতগুন। সঙ্গে বেড়েছে প্রণামের বহর। মুখের কথায় কাজ হচ্ছে না দেখে নিজের বাড়িতে পোস্টার সাঁটিয়ে দিয়েছেন সুজয় হাজরা। তিনি কোনও আশ্রমের মহারাজ বা গুরুদেব নন, তিনি হলেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি।

তাঁর স্ত্রীও মেদিনীপুর পুরসভার কাউন্সিলর। ফলে রাজযোটকে তাঁদের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে মির্জাপুরের বাড়িতে সকাল থেকেই সাক্ষাৎ প্রার্থীদের লম্বা লাইন। অভাব-অভিযোগ বা কাজের কথা বলার আগেই ঢক করে প্রণাম করেন সকলে। সুজয় বলেন, ''পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা আটকাতেই কাগজে লিখে বাড়ির অফিসে সাঁটিয়ে দিয়েছি। লিখে টাঙানোর পরেও অনেকে প্রণাম করতে এগিয়ে এলে একটু কর্কশ হয়ে বলে দিই, পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করাটা আমার পছন্দ নয়।''

 একথা কেন বলেন? ওঁরা তো কষ্ট পায়? তৃণমূল নেতা বলেন, ''প্রণাম যদি করতেই হয়, বাড়ি গিয়ে নিজের মা-বাবাকে প্রণাম করুক। তাঁরাই প্রণামের যোগ্য। তাঁরাই আশীর্বাদ করতে পারেন। তাঁদের প্রণাম করলেই হবে। আমরা রাজনৈতিক কর্মী। দলের নির্দেশ মেনে মানুষের জন্য কাজ করছি। আমরা কেউ নই।''  তৃণমূলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার অনেক আগে থেকেই একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সেবামূলক কাজ দিয়ে জীবন শুরু করেন সুজয়।

সেই সুবাদে বহু মানুষ তাঁদের সমস্যা, অভাব-অভিযোগ নিয়ে বাড়িতে আসতেন। দেখা করতে এলেই অনেকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণামও করতেন। হালে শাসকদলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হওয়ায় শুধু নিজের ওয়ার্ড বা শহরের লোক নয়, প্রতিদিন তাঁর বাড়িতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই দেখা করতে আসেন বহু মানুষ। সাক্ষাৎপ্রার্থীর সংখ্যাবৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে প্রণাম করার হিড়িকও।

যা নিয়ে চরম অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল সভাপতি। বাধ্য হয়ে কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে পোস্টার সাঁটিয়ে দিয়েছেন নিজের অফিস কাম বাড়িতে। সেখানে লেখা রয়েছে, ''দয়া করে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করবেন না।''  তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেন, ''পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা আমি পছন্দ করি না। কেউ আমাকে প্রণাম করলে আমি তাঁর কাজ করব, নাহলে করব না, এমনটা নয়।''

তবে নেতার বাড়ির অফিসে এমন লেখা দেখে অবাক অনেকেই। বছরের প্রথম দিনে খড়্গপুর থেকে দলের জেলা সভাপতির বাড়িতে দেখা করতে এসেছিলেন এক যুব নেতা। তিনি বলেন, ''বাড়িতে এসে দাদাকে যে একটা প্রণাম করব, তার উপায় নেই। আগে মুখে বলতেন, এখন তো দেখছি কাগজে বড় বড় করে প্রিণ্ট করে সাঁটিয়ে দিয়েছেন।''