মালদায় ত্রাণ কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে নাম জরালো প্রধান উপ-প্রধান সহ একাধিক তৃণমূল নেতার

মালদায় ত্রাণ কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে নাম জরালো প্রধান উপ-প্রধান সহ একাধিক তৃণমূল নেতার

 তনুজ জৈন   মালদা    মালদহের বরই গ্রাম পঞ্চায়েতের বন্যার ত্রাণ কেলেঙ্কারি ঘটনা সামনে পর এবার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক এলাকার কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০১৭ সালের বন্যার ত্রাণের টাকা নয় ছয়ের ঘটনা সামনে এলো। তবে এবার ত্রাণের টাকা প্রকৃত ক্ষতি-গ্রস্তদের একাউন্টে না ঢুকিয়ে সরাসরি ওই পঞ্চায়েতের শাসকদলের প্রধানের স্বামী, উপ-প্রধানের নিজস্ব একাউন্ট এবং শাসক দলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের নিজের এবং তার পরিবারের একাধিক সদস্যের নামে বন্যা ত্রাণের টাকা ঢুকানোর অভিযোগ সামনে এলো।

এমনকি ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তিনজন বিজেপি সদস্যের একাউন্টে বেআইনি ভাবে ক্ষতি-পূরণের টাকা ঢোকানো হয়েছে বলে পাশাপাশি অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ নিয়ে এলাকার সিপিএম নেতৃত্ব জেলাশাসকের দ্বারস্থ পর্যন্ত হয়েছে বলে খবর। এদিকে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরই ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী, উপ-প্রধান সহ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যর নিজের একাউন্টে পাওয়া ত্রাণের টাকা ফেরত দিতে শুরু করেছেন।

এদিকে জেলাশাসক সহ একাধিক প্রশাসনের আধিকারিকের কাছে অভিযোগ জানিয়ে আশানুরূপ ফলাফল না হওয়াতে এলাকার অভিযোগকারী সিপিআইএম নেতৃত্ব হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী সপ্তাহে এই নিয়ে একটি মামলা দায়ের করতে চলেছেন তারা। আর গোটা ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে শাসক ও বিরোধীদের চাপানউতোর।

উল্লেখ্য ইতিমধ্যেই হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি এবং বরই গ্রাম পঞ্চায়েতের বন্যার প্রাণ দুর্নীতি নিয়ে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যেই ওই মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূলের প্রধান সহ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য এবং এলাকার এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় এবং তাদের গ্রেফতার করা হয় হাইকোর্টের নির্দেশে।

এই ঘটনার পরেই আবার একই ব্লকের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বন্যা ত্রাণ দুর্নীতির কথা সামনে আসতেই হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এলাকার সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ শাসকদলের প্রধানের স্বামী আব্দুল রশিদ, এই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান তথা তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি নুর আজম,

এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য অলক পোদ্দার, অলোক বাবুর স্ত্রী এবং পুত্র সহ ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তিন বিজেপি সদস্যের একাউন্টেও বন্যা ত্রাণের ক্ষতি-গ্রস্তদের টাকা ঢুকানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে এলাকার সিপিএম নেতৃত্বের তালিকা প্রকাশ করেছে। তাদের অভিযোগ অ্যাকাউন্ট নম্বরের নাম বদলে এই বেআইনি কাজ করা হয়েছে।

এবং বিশাল অঙ্কের টাকা এই ভাবে নয়-ছয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি তাদের অভিযোগ এই সমস্ত শাসক দলের নেতাদের বড় বড় বাড়ি রয়েছে, এবং যে সমস্ত অঞ্চলে তাদের বাড়ি সেখানে বন্যার জল প্রবেশই করেনি। অথচ প্রকৃত বন্যায় ক্ষতি-গ্রস্ত টাকা না পেয়ে এদের একাউন্টেই তারা ঢোকানো হয়েছে।

প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরে অভিযোগ জানিয়ে কোনো ফল হয়নি তাই  নেতৃত্বের দাবি এই বিয়াই নিয়মের বিরুদ্ধে তারা অবিলম্বে আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন। যদিও অভিযুক্ত প্রধান আখতারী খাতুনের স্বামী আব্দুল রশিদের বক্তব্য ভুলবশত টাকা ঢুকে ছিল সেটা আমরা ফেরত দিয়েছি। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু জানান অভিযোগ পেয়েছি, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।