পূর্ব বর্ধমান জেলা

পূর্ব বর্ধমান জেলা

পূর্ব বর্ধমান জেলা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত বর্ধমান বিভাগের একটি জেলা।  প্রতিটি জেলার এই নিজস্বতাই আজ আমাদের বাংলাকে সমৃদ্ধ করেছে। সেরকমই একটি জেলা হল পূর্ব বর্ধমান (Purba Bardhaman)। ৭ই এপ্রিল ২০১৭ সালে অখণ্ড বর্ধমান জেলা ভেঙ্গে পূর্ব বর্ধমান এবং পশ্চিম বর্ধমান এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়। পশ্চিমবঙ্গের ‘ধানের ভান্ডার’ বলা হয়ে থাকে পূর্ব বর্ধমান জেলাকে।

কৃষিভিত্তিক জেলা পূর্ব বর্ধমান।   বর্ধমান সদর উত্তর, বর্ধমান সদর দক্ষিণ, কালনা ও কাটোয়া এই ৪টি মহকুমা পূর্ব বর্ধমান জেলায় । থাকছে ১০টি থানা। এগুলি হল, বর্ধমান, ভাতার, আউশগ্রাম, গলসি, বুদবুদ, মেমারি, জামালপুর, রায়না, মাধবডিহি, খণ্ডঘোষ, কাটোয়া, কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট, কালনা, পূর্বস্থলি, মন্তেশ্বর ও নাদনঘাট। থাকছে ৩২৩টি পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লক। গ্রাম পঞ্চায়েত ২১৫টি।

থাকছে ৩২৩৪টি গ্রাম সংসদ। এই জেলায় থাকছে ১৬টি বিধানসভা। এগুলি হল, খণ্ডঘোষ, বর্ধমান দক্ষিণ, রায়না, জামালপুর, মন্তেশ্বর, কালনা, মেমারি, বর্ধমান উত্তর, ভাতার, পূর্বস্থলি দক্ষিণ, পূর্বস্থলি উত্তর, কাটোয়া, কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট, আউশগ্রাম ও গলসির ৮২ থেকে ২৯৩ নম্বর পার্ট।এই জেলায় উৎপাদিত গোবিন্দভোগ চাল তার সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত।

ভাল্কি মাচানের বন্য সৌন্দর্যের সাথে চুপির চরে অগুন্তি পরিযায়ী পাখির কোলাহল, নতুন গ্রামের বিখ্যাত কাঠের পুতুল শিল্পের সাথে মুঘল ইতিহাসের স্মৃতি সহ পূর্ব বর্ধমান বাংলার এক অনন্য জেলা হয়ে উঠেছে। ভৌগলিক দিক থেকে দেখলে এই জেলার উত্তরে বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমদিকে পশ্চিম বর্ধমান এবং বাঁকুড়া, পূর্বদিকে নদীয়া ও দক্ষিনে রয়েছে হুগলী জেলা৷

এই জেলার পূর্ব দিক থেকে বয়ে গেছে ভাগীরথী ও হুগলী নদী৷ এই জেলা, কালনা, কাটোয়া, বর্ধমান সদর উত্তর ও বর্ধমান সদর দক্ষিণ- এই চারটি মহকুমা নিয়ে গঠিত। ৫৪৩২ বর্গকিমি স্থান জুড়ে বিস্তৃত এই জেলা আয়তনের বিচারে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে এই জেলা পঞ্চম স্থান অধিকার করে৷  এই জেলায় বাংলা ভাষাভাষী মানুষের সংখ্যা ৮৮.৯৭%।

এছাড়া হিন্দী ৫.৫৬%, সাঁওতালী ৩.০৪%, উর্দু ১.৭১%, ও অন্যান্য ভাষায় ০.৭২% ভাষার ব্যবহারও লক্ষ করা যায়৷  এই জেলায় বেশ কিছু পর্যটন উপযোগী স্থান রয়েছে,  যেমন –  ১০৮ শিবমন্দির। এই মন্দিরটি এই জেলার কালনায় অবস্থিত অন্যতম প্রাচীন মন্দির। কার্জন গেট পূর্ব বর্ধমান জেলার একটি বিখ্যাত দর্শনীয় স্থাপত্য। এছাড়া রমনাবাগান বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, শের আফগানের সমাধি, কঙ্কালেশ্বরী মন্দির, অট্টহাস সতীপীঠ, ভাল্কি মাচান এখানকার অন্যতম দর্শনীয় স্থান। এই জেলায় যে সমস্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব জন্মগ্রহণ করেছেন তাঁদের মধ্যে মহাভারত অনুবাদক কাশীরাম দাস, সাহিত্যিক অক্ষয়কুমার দত্ত, বিপ্লবী নেতা রাসবিহারী বসু, বটুকেশ্বর দত্ত প্রমুখ ।

[ আরও পড়ুন শিলিগুড়ি | Siliguri ]