চাকরি দেওয়ার নামে করে প্রতারণার অভিযোগ পূর্ব মেদিনীপুরের দুই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে

চাকরি দেওয়ার নামে করে প্রতারণার অভিযোগ পূর্ব মেদিনীপুরের দুই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে

চাকরি দেওয়ার নামে করে প্রতারণার অভিযোগ উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের কোলার দুই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের নাম অতনু গুছাইত ও তাঁর ভাই শান্তনু গুছাইত। অভিযোগ, তাঁরা নিজেদের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দিতেন। এসএসসি, গ্ৰুপ ডি, গ্ৰুপ সি, প্রাইমারি শিক্ষকের ক্ষেত্রে চাকরি করিয়ে দেওয়ার নাম করে একাধিক ব‍্যক্তির কাছে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তাঁরা।

পরে আর চাকরি দেননি কাউকেই। পরে ধীরে ধীরে এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। অতনু ২০০৩ সালে কোলা ১ পঞ্চায়েতের সদস‍্য ও ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। তখন থেকেই এলাকায় তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে থাকেন তাঁরা। কোলা ১ নম্বর পঞ্চায়েতে অতনুর একটি সুবিশাল বাড়িও রয়েছে। যদিও তাঁর বাড়ি এখন তালাবন্দি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বেশ কয়েকজন অতনুর হাত ধরে চাকরিও পেয়েছিলেন। গ্রামে এ খবর রটেছিল। তখন থেকেই তাঁর প্রতি বিশ্বাস জন্মায় স্থানীয়দের। প্রতারিতদের ভুয়ো নিয়োগপত্রও দেওয়া হয়। কিন্তু নিয়োগপত্রের থাকা জয়েনের তারিখ চলে গেলেও তাঁদের নিয়োগ হয়নি। এতে সন্দেহ হওয়ায় প্রতারিতরা অতনুকে বারবার ফোন করেন, তাঁর বাড়িতে যান।

প্রতারিতদের বক্তব্য, তাঁদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় চাকরি হয়ে যাবে আর কয়েক মাসের মধ্যেই। কিন্তু সময় বুঝেই সপরিবারে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান অতনু। প্রতারিত অর্ণব গুড়ে বলেন, “অনেকের কাছেই চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছেন এবং আমার কাছেও আড়াই লক্ষ টাকা নিয়েছেন। বলেছিলেন গ্রুপ ডি, গ্রুপ সি ক্লার্ক, এসএসসি, যাতেই শূন্যপদ বেরোবে, তাতেই চাকরিতে যোগ করিয়ে দেবেন।

পরে আবার নিয়োগ পত্র পাইয়ে দেবেন বলে দেড় লক্ষ টাকাও নেন।” প্রতারিত ব্যক্তির দাবি, সেসময় তিনি সোনা রেখে টাকা দিয়েছিলেন। মোট ৪ লক্ষ টাকা অতনুকে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি প্রতারিতর। অর্ণব গুড়ের আরও দাবি, তাঁর কাছে অতনু প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন প্রতারিতরা।

অভিযুক্তের বাড়ি এ প্রসঙ্গে কোলাঘাট পঞ্চায়েতে সমিতির সভাপতি সুরজিৎ মান্না বলেন, “অতনুকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। ওঁ আমাদের দলেরই কর্মী ছিলেন। এখন দলের সঙ্গে যোগ নেই। চার-পাঁচ বছর দলের সঙ্গে কোনও যোগ নেই। দলের কর্মী নয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগ রয়েছে কিনা, সেটা আমার জানা নেই।”

বিজেপি নেতা দেবব্রত পট্টনায়েক বলেন,  “তৃণমূল দলটার নাম টাকা মারার ক্লাব। অতনু ওই ক্লাবের দালাল। অতনুর মতো বাংলায় প্রচুর এজেন্ট রয়েছে। আমরা দেখেছি ওর বিড়ি খাওয়ার পয়সা থাকত না, এখন কোলাঘাটের বুকে তিন তলা বাড়ি!” যেহেতু অতনু সপরিবারে পালিয়ে গিয়েছে, তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। প্রশ্ন উঠছে এই চাকরিপ্রার্থীদের ভূমিকা নিয়েও। কেন তাঁরা চাকরি পেতে টাকা দিয়েছিলেন, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।