পশ্চিম মেদিনীপুরে পণের দাবিতে শ্বশুর বাড়ির নির্যাতন, উদ্ধার গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ

পশ্চিম মেদিনীপুরে পণের দাবিতে শ্বশুর বাড়ির নির্যাতন, উদ্ধার গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ

west midnapur-এ পণপ্রথা ( Dowry case)এর শিকার হয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার হল এক গৃহবধুর ঝুলন্ত মৃতদেহ। যা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের আনন্দপুর থানা এলাকায়। তাঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে গৃহবধূর বাপেরবাড়ির লোকজন। জামাই সহ তাঁর পরিবারের ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন মৃতের বাবা।  

পুলিশ জানায়, মৃত গৃহবধূর নাম বিউটি নায়েক দোলই (২২)। আনন্দপুর থানার মহারাজপুর এলাকার গৃহবধূ বিউটির গলায় ফাঁস লাগিয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। সোমবার সকালে বিউটির শ্বশুরবাড়ি থেকেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিউটির বাবা নন্দ দোলইয়ের।

তিনি জামাই শুভজিৎ নায়েক, বিউটির শ্বশুর চিত্তরঞ্জন নায়েক, শাশুড়ি ঝর্ণা নায়েক, জ্যেঠশ্বশুর খোকন নায়েক এবং জ্যেঠতুতো ভাশুর গুণধর নায়েকের বিরুদ্ধে আনন্দপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বিউটির দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

 স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে চক থানার কেশপুরের বাসিন্দা ন্নদ দোলইয়ের মেয়ে বিউটির সঙ্গে আনন্দপুর থানার মহারাজপুরের যুবক শুভজিৎ নায়েকের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে শুভজিৎ ও তাঁর পরিবারের লোকজন বিউটির উপর অত্যাচার চালাত বলে অভিযোগ। অভিযোগপত্রে নন্দ দোলই জানিয়েছেন, বিউটির বিয়ের সময় পণ বাবদ নগদ ১ লক্ষ টাকা, ৪০ গ্রাম গয়না সহ দানের বাসনপত্র ও আসবাব দেওয়া হয়েছিল।

বিয়ের কিছুদিন পর থেকে আরও টাকার দাবি জানায় শুভজিৎ ও তার পরিবারের লোকজন। সেই দাবি মেটাতে না পারায় তারা বিউটির উপর অমানষিক অত্যাচার চালাত বলে অভিযোগ। জামাই, শ্বশুর, শাশুড়ি,  জ্যেঠশ্বশুর ও জ্যেঠতুতো ভাশুর মিলে বিউটিকে মারধর, গালিগালাজ করত, ঠিকমতো খেতে দিত না এবং অসুখ হলে ওষুধ দিত না বলেও অভিযোগ।

গত ১ এপ্রিল শুভজিৎ বিউটিকে বাপেরবাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলে। কিন্তু সেই টাকা দিতে পারেননি নন্দবাবু। এর দু-দিন পর, গত ৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টায় তাঁর কাছে খবর আসে, বিউটি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। জামাইকে ৫০ হাজার টাকা দিতে না পারার জন্যই বিউটির শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে খুন করে দেহ ঝুলিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ নন্দবাবুর। অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। নন্দবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে বিউটির দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।