কাশ্মীরে উগ্রপন্থিদের গুলিতে আহত মালদার দুই শ্রমিক

কাশ্মীরে উগ্রপন্থিদের গুলিতে আহত মালদার দুই শ্রমিক

 তনুজ জৈন   মালদা :    কাশ্মীরে গুলিবিদ্ধ হলেন মালদহের চাঁচলের দুই পরিযায়ী শ্রমিক। তারা সম্পর্কে জামাইবাবু ও শ্যালক। শুক্রবার রাতে ইফতারের পর ঘরে ঢুকে দুজন অগ্গাতপরিচয় ব্যক্তি তাদের লক্ষ করে গুলি চালায়। গুরুতর জখম অবস্থায় দুজনকেই স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুই শ্রমিকের একজনের নাম আনিকুল ইসলাম।

তার বাড়ি চন্দ্রপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বলরামপুর-হজরতপুরে। আনিকুলের শ্যালক নাজিমুল হক জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের হজরতপুরের বাসিন্দা। রাতে দুই শ্রমিকের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর এলাকায় পৌঁছাতেই শোকের ছায়া নেমে আসে। পুলিশ গিয়ে দুটি পরিবারের খোঁজখবর নেন। পাশাপাশি খবর পেয়েই এদিন দুপুরে এলাকায় যান মালতীপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি।

আহত দুই শ্রমিকের পরিবারের পাশা থাকার পাশাপাশি সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন বিধায়ক। জখম দুই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সাত ভাইবোনের মধ্যে বড় আনিকুল। আর চার ভাইবোনের মধ্যে নাজিমুলও বড়। বাড়িতে বাবা-মাও রয়েছেন। অভাবের সংসারে হাল ধরতে দুজনেই কাশ্মীরে পাড়ি দিয়েছিলেন। সেখানে কখনও ঘাস কাটার কাজ, কখনও নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন।

থাকতেন বড়গাম জেলার নওগাম এলাকায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় ইফতারের পর কাশ্মীর স্ত্রীকে ফোন করেছিলেন আনিকুল। বাড়িতে বাবা-মা, ছেলেরা কেমন আছে খোঁজখবর নিচ্ছিলেন। আচমকাই ফোনে গুলির শব্দ শুনতে পান স্ত্রী মেরিনা বিবি। সঙ্গে সঙ্গে ফোনের লাইন কেটে যায়। তারপর একাধিকবার চেষ্টা করলেও ফোনের স্যুইচ বন্ধ পান। ফলে যোগাযোগ করতে পারেননি।

ওই এলাকাতেই থাকেন চন্দ্রপাড়া এলাকার কয়েকজন শ্রমিক। কয়েক ঘণ্টা বাদে সেখান থেকেই মেরিনা ফোনে জানতে পারেন যে, স্বামী ও ভাই নাজিমুল গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তারা একই ঘরে থাকতেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, পরে বড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানতে পারেন। আনিকুলের স্ত্রী মেরিনা এদিন বলেন, ‘‘ওরা দুজনে একসঙ্গেই থাকত।

তাই চিন্তা ছিল না। কিন্তু ওদের উপরে যে এমন হামলা হতে পারে ভাবতেই পারছি না। ওরা তো কারও কোনও ক্ষতি করেনি। ওদের কিছু হলে দুটি আমাদের পাশাপাশি বাপের বাড়ির লোকজনকেও পথে বসতে হবে। চাঁচলের আইসি সুকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারিভাবে এখনও আমাদের কাশ্মীর প্রশাসনের তরফে কিছু জানানো হয়নি। তবে ঘটনার কথা জেনেই দুটি বাড়িতেই পুলিশকর্মীদের খোঁজখবর নিতে পাঠিয়েছিলাম।

ওরা গুলিতে জখম হয়েছেন বলেই পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে। এদিকে খবর পেয়েই এদিন এলাকায় গিয়েছিলেন বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি। তিনি বলেন, ‘‘এলাকার শ্রমিকদের সঙ্গে ভিডিও কলে ফোন করে দুই শ্রমিকের অবস্থা নিয়ে খোঁজ খবর নেন। বিধায়ক বলেন, ওদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সঠিক চিকিত্সা হয় তা জেলা প্রশাসনকে দেখতে বলব। আমরাও সবরকমভাবে পরিবারটির পাশে থেকে সাহায্য করব।’’