রাজ্যে হাই জাম্পে প্রতিযোগীতায় ৫৫ বছরের রানাঘাটের গৃহবধূর সোনাজয়

রাজ্যে হাই জাম্পে প্রতিযোগীতায় ৫৫ বছরের রানাঘাটের গৃহবধূর সোনাজয়

রানাঘাট   ভারতীয় শরীরচর্চার জনক মনোহর আইচের কথা মনে আছে তো? বয়স এবং উচ্চতা তার কাছে হার মেনেছিলো। তবে তিনি ছিলেন পুরুষ। গৃহবধূ হিসাবে 55 বছর বয়সে অন্যান্য রাজ্যের প্রতিযোগীনীদের পেছনে ফেলে বাংলার হয়ে সোনাজয়  বোধহয় এই প্রথম। নদীয়ার রানাঘাট শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের দে চৌধুরীপাড়ার 55 বছরের এক গৃহবধূ হাসি রাশি দে সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখালেন।

উত্তর 24 পরগনার  কাচরা পাড়ায় বাপের বাড়ির সামনে মাঠে খেলতে আসা অ্যাথলেটিক্সদের অনুশীলন দেখতে দেখতেই স্বপ্ন দেখেছিলেন অ্যাথলেটিক্স হওয়ার। আর সেই স্বপ্ন সফল হলো এতদিন বাদে । কঠিন এবং নিয়মিত অনুশীলনের ফলে সে সময় আন্তঃরাজ্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হয়েছিলেন তিনি।

ভারতীয় অলিম্পিয়ান ফুটবলার নিখিল নন্দীর চোখে পড়ায় তাঁরই নিকট আত্মীয়ের সাথে অল্প বয়সেই রানাঘাটে বিয়ে হয় হাসিরাশি দেবীর। এক ছেলে এবং মেয়ের পড়াশোনা সামলাতে গিয়ে অনুশীলন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিলো। যদিও বা মাঝেমধ্যে সম্ভব হতো তাও বাধ সাধলো স্বামীর ক্যান্সার। এতকিছুর মধ্যেও এতটুকু বিচলিত বা লক্ষ্যভ্রষ্ট হননি তিনি।

সারদা মা এবং স্বামী বিবেকানন্দের প্রতি ভক্তি, তাকে যোগাতো মানসিক শক্তি। স্বামী ছেলেমেয়ে তো বটেই পরিচিত পরিজনদের মধ্যে থেকেও অনেকেই তাঁর প্রতিভা প্রকাশ এর জন্য অনুরোধ জানাতেন। গত কুড়ি- বাইশ শে মে তামিলনাড়ুর আন্না স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল মাস্টার্স অ্যাথলেটিক্সে অংশগ্রহণ করেন তিনি।

অন্যান্য রাজ্যের থেকে আগত চল্লিশোর্ধ মহিলাদের মধ্যে তিনি হাই জাম্পে 0.90 মিটার উচ্চতা অতিক্রম করে বাংলার হয়ে জয় করে নেন উইনার সার্টিফিকেট এবং সোনার মেডেল। নদীয়া তথা সারা রাজ্যের ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ তার এই প্রতিকূলতার মধ্যেও অদম্য প্রচেষ্টার সফলতাকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।