জাতীয় স্তরে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করলেন ইংলিশবাজারের বধূ তনুশ্রী

জাতীয় স্তরে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করলেন ইংলিশবাজারের বধূ তনুশ্রী

যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে। জাতীয় স্তরে বাংলার নাম উজ্জ্বল করে এই প্রবাদবাক্যটি সত্যি প্রমাণ করলেন মালদহের ইংলিশবাজারের বাসিন্দা তনুশ্রী লালা। চেন্নাইয়ের জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত মাস্টার্স অ্যাথলেটিক্সে ৩৫ বছরের ক্যাটাগরির ৫ কিলোমিটার ওয়াকিং রেসে প্রথম হয়েছেন মালদহের ইংলিশ বাজারের গৃহবধূ। তার এই দৃষ্টান্ত স্থাপনের ঘটনায় আনন্দিত তার পরিবার এবং প্রতিবেশীরা। 

 সংসার সামলেও যে এত বড় সাফল্য আনা যায়, তার দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন তিনি। শুধু সোনা নয়, আরও একটি ইভেন্টে তৃতীয় হয়ে ব্রোঞ্জ পদকও জিতেছেন তনুশ্রী (Athlete)। ১৫০০ মিটার দৌড়ে তৃতীয় হয়েছেন তিনি। ন্যাশনালে দু'টি পদক জিতে আনন্দিত তনুশ্রী। আগামী দিনে তিনি অ্যাথলেটিক্সে আরও এগিয়ে যেতে চান, অংশগ্রহণ করতে চান বড় প্রতিযোগিতায়।

তবে যতই পদক আসুক, নিয়মিত খেলার ও অনুশীলনের খরচ কীভাবে জোগাড় হবে সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে, তা নিয়ে চিন্তিত তিনি। মালদহ স্পোর্টস অ্যাসোশিয়েসনের কাছে এ বিষয়ে আবেদনও জানিয়েছেন। জানা গেছে, ইংলিশবাজারের কৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা তনুশ্রী সংসারের যাবতীয় কাজ, স্বামী, দুই সন্তানকে সামলে খেলতে গেছিলেন। সেখানেই ৩৫ মিনিটে ৫ কিলোমিটার হেঁটে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।

তাঁর স্বামীর নাম সুব্রত লালা, বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন তিনি। তাঁদের দুই ছেলে রয়েছে। প্রতিদিন ভোর ৫টায় উঠে প্র্যাকটিসে যান তনুশ্রী। তার পরে সারাদিন সংসারের যাবতীয় কাজ করেন। ফের বিকেলে অনুশীলনে নামেন। ইচ্ছেশক্তি ও খেলার প্রতি ভালবাসা টান- এই জোরেই তিনি হার না মানা মানসিকতায় লড়ে গিয়েছেন।

সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত করেছেন তাঁর ট্রেনার অসিত পাল। সোনা জয় করে এসে তনুশ্রীদেবী বলেন, 'খুব ছোট থেকেই খেলাধুলা পছন্দ করি। আগেও বিভিন্ন জায়গায় ভাল খেলেছি। তবে বিয়ের পরে ১৯ বছর ধরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল খেলা। আবার মাঠে নেমেছি এখন। সংসার সামলেই প্র্যাকটিস করছি। আরও খেলতে চাই। তবে টাকা কই! কেউ পাশে দাঁড়ালে ভাল হয়।'

তনুশ্রীর ট্রেনার অসিত পাল বলেন, এটা মাস্টার্সের খেলা অর্থাত্‍ বয়স যাঁদের বেশি, তাঁরাই অংশগ্রহণ করেন। ফলে প্রতিযোগীরা সবাই অভিজ্ঞ। সেখান থেকে পুরস্কার ছিনিয়ে এনেছেন তনুশ্রী, এটা অনেক বড় ব্যাপার। এবার তিনি আন্তর্জাতিক স্তরেও খেলতে পারবেন। মালদহ জেলা স্পোর্টস অ্যাসোশিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ দিলীপ কুমার দে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।