নেপালের আর্থিক সংকটের প্রভাব শিলিগুড়িতেও!

নেপালের আর্থিক সংকটের প্রভাব শিলিগুড়িতেও!

 

আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে নেপাল (NEPAL)। তবে কী শ্রীলঙ্কার (sri lanka ) পথেই এগোচ্ছে ভারতের উত্তরের এই প্রতিবেশ দেশটি? এমনই প্রশ্ন উঠে আসছে। যদিও শ্রীলঙ্কার তুলনায় পরিস্থিতি কিছুটা ভাল বলেই দাবি করছে পর্বত-ঘেরা উত্তরের এই দেশটি। তবে দাবি যা-ই হোক না কেন, বাস্তবে নেপালের আর্থিক সংকটের প্রভাব পড়েছে বাংলাতেও।

বিশেষত, উত্তরবঙ্গের (north bengal)ব্য়বসায়ী মহলে।  নেপালের অন্যতম প্রবেশদ্বার হল শিলিগুড়ি। বিশেষত, বাংলা থেকে নেপালে প্রবেশের অন্যতম পথ হল শিলিগুড়ি। ফলে নেপালের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত শিলিগুড়ি। তাই নেপালের বিদেশি ব্যাঙ্কিং লেনদেন থেকে শুরু করে পণ্য আমদানি-রফতানিকমে যাওয়ায় পরোক্ষ প্রভাব পড়েছে উত্তরবঙ্গের বাজারে।

এমনকি পর্যটন ব্যবসাতেও বিশেষ প্রভাব পড়েছে।  জানা গিয়েছে, বর্তমানে নেপালের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক বিদেশি ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে। পর্বতবেষ্টিত ছোট্ট দেশ নেপালে অধিকাংশ সামগ্রী রফতানিহয় ভার‍ত ও অন্যান্য দেশ থেকে।

যেমন, উত্তরবঙ্গ থেকে চাল, শাক-সবজি থেকে শুরু করে চিনি, তেল চিকিৎসার সরঞ্জাম সহ বহু সামগ্রী নেপালে রফতানিহয়। কিন্তু ব্য়াঙ্কিং লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আপাতত আর এসব আমদানি করছেন না নেপাল ব্যবসায়ীরা। এছাড়া আর্থিক সংকট তো রয়েছেই। ফলে ভারত সহ অন্যান্য় দেশ থেকে পণ্য় আমদানি না করতে পারায় যেমন চিন্তায় পড়েছে নেপালের ব্যবসায়ী মহল, তেমনই উত্তরবঙ্গের অনেক ব্যবসায়ীদেরও উদ্বেগ বেড়েছে।

নর্থ বেঙ্গল এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ব্রজকিশোর প্রসাদ বলেন, "নেপালে আগে সমস্ত কিছুই রফতানিহচ্ছিল। কিন্তু এখন শুধু মাত্র গম, ভুট্টা সহ জরুরি কিছু সামগ্রী রফতানিকরা হচ্ছে। অন্যান্য প্রায় সমস্ত রপ্তানিতে আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ফলে প্রবল ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে উত্তরবঙ্গের ব্য়বসায়ীদের।

অন্য়দিকে, নেপাল থেকে আদা সহ যে সমস্ত সামগ্রী শিলিগুড়ির বাজারে আসে, সেগুলির আমদানিও এখন বন্ধ রয়েছে। ফলে সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে।" চলতি বছরের মার্চ মাস থেকেই লেনদেন বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রজকিশোর প্রসাদ। শুধু পণ্য আমদানি, রুপ্তানি বন্ধ নয়, নেপালের আর্থিক সংকটের প্রভাব পড়েছে উত্তরবঙ্গের পর্যটন ব্যবসাতেও।

বাংলা তথা ভারত থেকে বহু পর্যটক যেমন নেপালে যান, তেমনই নেপাল থেকে বহু পর্যটক এখানে আসেন। কিন্তু গত দু-তিন মাস ধরে নেপাল থেকে ভারতে আগত পর্যটকের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে বলে শিলিগুড়ির পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন। সবমিলিয়ে,নেপালের আর্থিক সঙ্কটের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাতেও।

এখন কবে পরিস্থতি স্বাভাবিক হবে সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে এখানকার ব্যবসায়ী মহলও। প্রসঙ্গত, পর্বতবেষ্টিত নেপালের অধিকাংশ নাগরিক বিদেশে কর্মরত। ফলে নেপালের অর্থনীতির বেশিরভাগটাই বিদেশি মুদ্রার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জেরে বিদেশে কাজ হারিয়ে ফিরে এসেছেন নেপালের অধিকাংশ নাগরিক।

তারপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আর বিদেশে কাজ ফিরে পাননি তাঁরা। আবার মহামারী-আতঙ্কে অনেকে বিদেশে যেতেও ভয় পাচ্ছেন। দেশেই কোনও কাজ খোঁজার চেষ্টা করছেন। প্রায় দু-বছর ধরে এই অবস্থা চলার ফলে নেপালে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে।